Kowloon Generic romance
লিখেছেন - বিমুগ্ধ সরকার রক্তিম
সত্যি বলছি, নস্টালজিয়া ব্যাপারটা গল্পে বা কোনো লেখায় ফুটে উঠতে দেখলে প্রচন্ড ভালো লাগে আমার। একটা সময় ফেলে এসেছি, সেটাতে আর ফিরে যাওয়া সম্ভব না। কিন্তু বই আর সিনেমা এমন অসাধারণ একটা জিনিস, যা টাইম মেশিনের মতো আমাদের সেই সময়ে নিয়ে যেতে পারে, সেটা মানেন?
গল্পের কাহিনী :
Kowloon শহর একটা আইসোলেটেড শহর। চারদিক থেকে বিশাল আকারের বিল্ডিংই এর বর্ডার। এর ভেতরে আলাদা একটা কালচারের সমাজ গড়ে উঠেছে, যা এর বাইরের কোণো জায়গার সাথে মেলে না। আমি ভেবেছিলাম এটা বোধহয় বাস্তবে সম্ভব না, কিন্তু আসলেই চায়নায় এই শহরের অস্তিত্ব ছিল! কমেন্টে দিচ্ছি। পরে ভেঙ্গে তা নতুন করে গড়ে তোলা হয়েছে। লেখক সেই সময়ের নস্টালজিয়া, সে সময়টাকে ফোটানোর জন্যই বোধহয় এই মাঙ্গাটা লিখে যাচ্ছেন। সেই সাথে তার অতিপরিচিত পরিণত রোমান্স তো রয়েছেই।
আপনি ছোটবেলায় যে মফস্বল এলাকায় বড় হয়েছেন সেটার কথা চোখ বন্ধ করে ভাবুন। অলিগলিতে বন্ধুদের সাথে ক্রিকেট খেলছেন, মাঠে ফুটবল, লাটিম ঘুরাচ্ছেন, মার্বেল খেলে জিতে যাচ্ছেন, পাড়ার মুদি দোকানদার এর দোকান থেকে মেরি বিস্কুট কিনে বাসায় যাচ্ছেন বাবার হাত ধরে। শবে বরাতের রাতে হালুয়া রুটি পাশের বাসায় নিচ্ছেন, ঈদের আনন্দ—সবকিছু মনে পড়ে?
এই Kowloon শহরটা পুরোটাই একটা নস্টালজিয়ার শহর। পুরোনোকে আঁকড়ে ধরে রাখা একটা শহর। যেখানে ঐ মানুষগুলোই বাস করে যারা পুরোনোকে ছেড়ে দিতে চায় না—হোক সেটা পুরোনো রেডীও কিংবা পুরোনো প্রেম। মানুষ এখানে ব্যাকডেটেড হতে পারে স্বেচ্ছায়, যা আমাদের শহরগুলোতে সম্ভব না। কিছু মানুষ পরিবর্তনের সুর আনার চেষ্টা করলেও মানুষ তাদের খুব বেশি পাত্তা দেয় না। পুরোনো রেডীর নব ঘুরিয়ে রাস্তার পাশে বোর্ড পেতে বুড়োরা দাবা খেলে। পাশেই ক্রিকেট খেলছে একদম কচিকাচা। পাশের গলি থেকে কাটলেট ভাজার সুগন্ধ ভেসে আসে। পুরোনো জিনিসপত্র ঠিক করার দোকানে ভিড় করে মানুষ। ঝিরঝিরে টিভিতে খবর দেখে মানুষ। বিশাল একটা শহর। অতীতের শহর। নস্টালজিয়ার শহর। ভালোবাসার শহর। সোঁদা গন্ধের শহর।
এরই মাঝে একটা অফিসের দুজন কর্মচারীদের মধ্যে জেনেরিক একটা রোমান্স—কিন্তু না। সেখানেও রয়েছে অনেক কিছু। গল্পটা ঘুরেফিরে ছয় সাতজনকে কেন্দ্র করে বলে মনে হলেও গল্পটা Kowloon শহরের।
অনেককথা লিখে ফেললাম। এই লেখকের আরেকটা জিনিস খুব ভালো লাগে। সাইড ক্যারেক্টারদের চমৎকারভাবে ডেভেলপ করেন তিনি।